ফেনীর পরশুরামের বক্সমাহমুদ ইউনিয়নের বক্সমাহামুদ বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে মুদি, ঔষধ, ফার্নিচার ও স্বর্ণ দোকানসহ প্রায় অর্ধশতাধিক দোকান আগুনে পুড়ে ছাঁই হয়ে গেছে। অবশিষ্ট রইল না কিছুই।
রোববার (১৮ এপ্রিল) দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে বক্সমাহমুদ বাজারের মামুন ও জসিম পাটোয়ারী মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের এই ঘটনা ঘটে। প্রাথমিকভাবে অগ্নিকান্ডের কোন কারণ জানা যায়নি তবে বৈদ্যুতিক শটসার্কিট থেকে অগুনের সূত্রপাত হতে পারে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস পরশুরাম উপজেলা শাখার অফিসার সারাং মারামা।স্থানীয় ব্যবসায়ী ও ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তারা জানান, অগ্নিকাণ্ডে প্রায় দেড় কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এসময় বাজারের জিরো পয়েন্টের কবির সওদাগরের দোকান থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে মসজিদ রোড় হয়ে ভিতরের বাজার পর্যন্ত ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে মামুন মেম্বারের দোকান, রুমনের বাহার ফার্মেসি, কালুর ধান দোকান, জসিম পাটোয়ারির দোকান, রতন ডাক্তারের ফার্মেসি, ছতু মিয়ার ফার্নিচার দোকান, কাদেরের মুদি দোকান, খায়েরের মুদি দোকান, তাপসের মুদি দোকান, রাজুর মুদি দোকান, কবির সওদাগরের মুদি দোকান, আদি নারায়ন স্বর্ণ দোকান, সুনিলের মুদি দোকান, রফিকের পান দোকান, অহিদ মাষ্টারের কাপড় দোকানসহ ১৭টি দোকান পুড়ে ছাঁই হয়ে যায়। পরে ফায়ার সার্ভিস এর পরশুরাম,ফুলগাজী,ছাগলনাইয়া র ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে একসাথে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। অন্যথায়, পুরো বাজার পুড়ে ছাঁই হয়ে যেতো বলে জানান স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীদের অনেকে জানান, বাজারের নৈশপ্রহরীদের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি যে মামুন ও জসিম পাটোয়ারী মার্কেটে ভয়াবহ আগুন লেগেছে। শুনে ঘটনাস্থলে এসে দেখি জিরো পয়েন্ট থেকে মসজিদ রোডের সবকটি দোকানে আগুন জ্বলছে। আমাদের দাঁড়িয়ে থেকে দেখা ছাড়া আর কিছুই করার ছিল না। ব্যবসায়ী মামুন মেম্বার , রুমন বাহার ,কালুর মিয়া,জসিম পাটোয়ারি,রতন ডাক্তার, ছতু মিয়া, কাদের ও তাপস সহ অনেকে জানান, আগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্ত এই মার্কেটের উপর নির্ভর করে প্রায় ১৫০-২০০ জন ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা তাদের জীবীকা নির্বাহ করতো।কাল সন্ধ্যা পর্যন্তও যেখানে বসে ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যবসায় চালিয়ে যাচ্ছিলো সেখানে আজ পোড়া গন্ধ আর ছাঁইয়ের স্তুপ।
ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়রীরা জানান, রমজান উপলক্ষে অনেকে ঋন করে লক্ষ লক্ষ টাকা পুঁজি দিয়ে নতুন ভাবে ব্যবসায় গোঁছানোর জন্য মালামাল উঠিয়াছে। কিন্তু ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে তাদের সকল স্বপ্ন ধূলিসাৎ হয়ে গেল। তাদের মাথায় হাত, সব কিছু হারিয়ে পথে বসার অবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের। কি করবে কেউ কিছু বুঝতে পেরেছে না। ঋনের বুজা মাথায় নিয়ে কিভাবে এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠবে? হয়তো না খেয়েই মরতে হবে ব্যবসায়ীদের। এদিকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি,উপজেলা প্রসাশন সহ অনেকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রিয়াংকা দত্ত জানান, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। অগ্নিকাণ্ডে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারনে কাজ চলছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারনের পর ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সরকারি ত্রান সহযোগিতা করা হবে বলেও তিনি জানান।
Recent Comments